পেট চালাতে গেলে কত কিছুই না করতে হয়। তেমনি বেঁচে থাকতে গেল ও এই পৃথিবীতে অনেক কিছুই করতে হয়। এই উল্লেখে কবি সুকান্ত ভট্টাচার্য্যের কবিতার একটি লাইনও বলা হয়েছে যেখানে তিনি বলেছেন ক্ষুধার রাজ্যে পৃথিবী গদ্যময়, পূর্ণিমা চাঁদ যেন ঝলসানো রুটি। আসলে বিংশ শতাব্দীর অধিকাংশ বাঙালীরা ক্ষুধার সাথে খুব পিরিচিত ছিল, হয়তো তারা পূর্ণিমার চাঁদকে ঝলসানো রুটি মনে করে তার দিকে তাকিয়ে থাকতো। কিন্তু বর্তমানে বাঙালীদের পেক্ষাপট পরিবর্তন হয়েছে। এখন দেশ উন্নয়নের দিকে। তবে আজকে আমরা কথা বলবো উত্তরপ্রদেশের দুই তরুনীর নিয়ে।
যারা গত চার বছর ধরে তার বাবার সেলুন চালাচ্ছে পুরুষ ছদ্মবেশে। একজনের বয়স 18 যার নাম জ্যোতি, আরেকজনের বয়স 16 যার নাম নেহা। তবে তাদের হঠাৎ এই পুরুষ ছদ্মবেশে নিতে হল কেন? এদের পরিবারের একমাত্র রোজগার করতেন তাদের বাবা। আর তাদের বাবা অসুস্থ হওয়ার পরই পরিবারের সমস্ত রোজগার যেন বন্ধ হয়ে যায় টান পড়ে সংসারে দুবেলা-দুমুঠো খাবার এর জন্য। বাবা বিছানা গত তার য়েরে কার্যত বন্ধ সেলুনের। বন্ধ হয়ে যায় মেয়েগুলির পড়াশোনাও। তাই এই দুই মেয়ে সিদ্ধান্ত নেয় তারা তাদের বাবার সেলুনটিকে চালাবে তবে মেয়ে হয়ে নাপিতের কাজ করবে এই সমাজ কি তাদের মেনে নেবে এমন অবস্থায়। তাই এরা সমাজের চোখে ধুলো দিয়ে পুরুষের ছদ্মবেশ ধারণ করে, কেটে ফেলে তাদের চুল, বদলে ফেলে তাদের নাম ও।তারা বলে এই সেলুন ছিল তাদের একমাত্র রোজগারের পথ।
কিন্তু তারা জানতেন মেয়ে হিসাবে সেলুনে নাপিতের কাজ করতে হলে আমরা বিদ্রুপের শিকার হতাম। তবে ছেলে সেজেও তাদের কম লাঞ্ছনার শিকার হতে হয়নি তাদের কারণ ঘনিষ্ঠ লোকেরা জানতেন তাদের আসল পরিচয় আর তাই তারা উঠতে-বসতে কটাক্ষ করতো তাদের, এমনটাই অভিযোগ এই দুই বোনের। তবে তারা তাদের নিজস্ব কাজে একদম পরিপক্ক ছিল।তাই তারা তাদের কোনো কথায় কান না দিয়ে তাদের কাজ চালিয়ে যায় এখন তারা প্রতি দিনে 400 টাকা রোজগার করে। সকালে স্কুল, দুপুরে সেলুন এভাবে তারা জীবন সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে। জ্যোতি এখন স্নাতক ও।
তাদের এই জীবন সংগ্রামের কথা যখন প্রকাশ্যে সংবাদমাধ্যমের শিরোনামে চলে আসে চর্চা হয় এই দুই বোনকে নিয়ে। নেহা বলে তারা কাউকে এখন ভয় পায় না এখন সবাই জানে তারা মেয়ে। তারা জানায় আগের তুলনায় আরো আত্মবিশ্বাস পেয়েছে এখন তারা। তাদের কথায় এটাও প্রকাশ হয় যে তাদের বাবা যখন জানতে পারে তার মেয়েরা এই সেলুনের কাজ করছে প্রথমে কষ্ট পেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু এখন সত্যিই তাদের কাছে ঋণী তিনি। এমনকি আপনারা এটা জানলে অবাক হবেন যে এই জীবন সংগ্রামে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার জন্য এই দুই বোন যোগী সরকারের কাছে প্রশংসিত ও হয়েছেন।