Skip to content

ভারতের এই প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ভারতকে শিখিয়েছিলেন, যে বিরোধী ও সরকারের মধ্যেও ভালো সম্পর্ক থাকতে পারে।

ভারতবর্ষের রাজনীতির মূল হয়ে উঠেছে এখন বিরোধীরা। তা বিরোধীপক্ষই হোক বা সরকারপক্ষ। ঠিক এরকম একটা পরিস্থিতিতে একটা মানুষের কথা এখন মনে পড়ছে যে মানুষটা ভারতকে বুঝেছিলেন যে, “রাজনীতি মে মতবিরোধ চল সকতা হ্যায়,লেকিন মনবিরোধ নেহি।” 25 ডিসেম্বর ভারতের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ও ভারতরত্ন অটলবিহারী বাজপেয়ীর 98 তম জন্মদিন । ভারতের এই প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ভারতকে শিখিয়েছিলেন যে বিরোধী ও সরকারের মধ্যেও ভালো সম্পর্ক থাকতে পারে। 1998 সালে কেন্দ্রে তখন কংগ্রেসের সরকার।তখন ভারতের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন পিভি নরসিমা রাও। কাশ্মীরের উপর ভারতের অত্যাচারের বিষয়টি নিয়ে যখন ইউএনওর হিউমেন রাইটস কমিশনে অভিযোগ করেছিলেন পাকিস্তানের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বেনজির ভুট্টো।

UNO থেকে ভারতের ডাক পরল। ভারত জবাব দিহি করো, কেন নাক গলালো? তারপর পার্লামেন্টের রুদ্ধশ্বাস বৈঠক, কে যাবেন? কে এই প্রশ্নের জবাব কে গুছিয়ে দিতে পারবেন? তারপর কংগ্রেসের মন্ত্রী সবাই ঠিক করলো এর উত্তর একজনই দিতে পারবেন। তারপর প্রধানমন্ত্রী নরসীমা রাওয়ের ফোন গেল 5 ফুট 6 ইঞ্চি এক মহান ব্যক্তির কাছে। তবে তিনি কংগ্রেসের কেউ ছিলেন না,তিনি ছিলেন বিরোধী আসনে বসে যে মানুষটি একাধিক রাজনৈতিক ইস্যু নিয়ে বিরোধীদের একেবারে কুপোকাত করে দিতেন সেই অটলবিহারী বাজপেয়ী কে পাঠানো হল জেনেভা-র মানবাধিকার সম্মেলনে ভারতের এক প্রতিনিধি হয়ে। এবং সঙ্গে ছিলেন সালমান খুরশিদ এবং ফারুক আব্দুল্লা।
জেনেভাতে অনুষ্ঠিত হওয়া মানবাধিকার সম্মেলনে পাকিস্তান সরকারের ওঠানো করা অভিযোগের ভিত্তিতে ভারতকে মুখ রক্ষা করেন এই অটলজি।

এর মাধ্যমে ভারতীয় রাজনীতিতে এক অবিস্মরণীয় ঘটনার সূত্রপাত করলেন প্রধানমন্ত্রীর নরসিমা রাও এবং তৎকালীন অন্যতম বিরোধী নেতা অটলবিহারি বাজপেয়ী। এই ঘটনার পর অটলজি বলেন, ” ওই সময় আমাকে বলেছেন নরসীমা রাও চালাকি করেছে। এ বিষয়ে তিনি বার্তা দিয়েছেন দেশে যে কোন বিষয়ে সরকার বিরোধী একতা রয়েছে।” তিনি আরো বলেন যে, “যদি আমি ওখানে ব্যর্থ হয়ে যেতাম তাহলে বিরোধী বিজেপি কেন্দ্র সরকার কে আক্রমণ করতে পারত না।” প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর জীবনে এরকম প্রচুর ছোট ছোট ঘটনা রয়েছে। পার্লামেন্টে প্রধানমন্ত্রীর জওহরলাল নেহেরুর একটি ছবি টাঙানো থাকতো।

যখন অটলজি কেন্দ্র মন্ত্রী ছিল তখন তিনি হঠাৎ দেখলেন জওহরলাল নেহেরুর ছবিটা পার্লামেন্টে টাঙ্গানো নেই। সেটা দেখার পরে মন্ত্রিসভায় সরাসরি প্রশ্ন করলেন,” নেহেরুজির ছবি কোথায়?” সব থেকে অবাক হওয়ার বিষয় হলো ওই প্রশ্নে এতটাই জোর ছিল যে তার পরের দিন এই ভারতের প্রধানমন্ত্রীর ছবি ওই স্থানে চলে আসে। ”
অটলজি রাজনৈতিক নেতা ছাড়াও হিন্দি সাহিত্যের একজন প্রখ্যাত কবি ছিলেন। মৃত্যুকে আলিঙ্গণ করার আগেই তিনি অমরত্ব লিখে গেছেন,
মৃত্যুর বয়স কত?
দু-টো মুহূর্তও নয়
জীবন বহমান নদী,
মুহূর্তকে কেন ভয়?
আমি স্পর্শ করেছি সবটুকু জীবন
স্বাগতম তোমায় মৃত্যু-মরন-জয়
ফিরবো আবার,কিসের ভয়।
উপরের কবিতাটি অটলজির একটি হিন্দি কবিতা থেকে অনুবাদ করা হয়েছে।