আজকের জীবনে মাঠের অভাব আমরা সকলেই বেশ ভালোমতো বুঝতে পারি। তার ওপর মহামারীর পর যেভাবে আমাদের জীবনযাত্রায় পরিবর্তন এসেছে তাতে একটি শিশুর স্বাভাবিক উচ্চতা বৃদ্ধি নিয়ে সমস্যা হওয়া কিছু অস্বাভাবিক কথা নয়। বয়সন্ধি থেকে ১৮ বছর পর্যন্ত থাইরয়েড গ্রন্থির ক্রিয়াশীলতা এবং বিভিন্ন গ্রোথ হরমোনের প্রভাবে স্বাভাবিকভাবে উচ্চতা বৃদ্ধি হয় একটি শিশুর।
সাধারণত শিশুরা প্রতিবছর ছয় থেকে সাত সেন্টিমিটার পর্যন্ত উচ্চতায় বাড়তে পারে কিন্তু কখনো যদি হরমোনের ভারসাম্যের রদবদল হয় সে ক্ষেত্রে সমস্যা তৈরি হয়। কার উচ্চতা কেমন হবে তা অনেকটা নির্ভর করে সেই শিশুটির পিতা-মাতার জিনগত বৈশিষ্ট্যের উপর। তবে যাদের এই জিনগত সুবিধা নেই, তাদের উচ্চতা বৃদ্ধির জন্য অতিরিক্ত পরিশ্রম করতে হয়। তবে এতকিছু করার পরেও যদি ফল না পাওয়া যায় সেক্ষেত্রে চিন্তায় পড়ে যান অভিভাবকরা।
চিকিৎসক এবং পুষ্টিবিদদের মতে, উচ্চতা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে শারীরিক কসরাতের পাশাপাশি প্রয়োজন হয় পুষ্টিকর খাবারের। সঠিক বয়সে যদি শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণ পুষ্টি না থাকে বা খেলাধুলা বা শরীর চর্চা না হয় তাহলে শরীরের বৃদ্ধি ব্যাহত হয়। তাই সঠিক সময় সঠিক উচ্চতা বৃদ্ধির জন্য কিছু কিছু খাদ্য শিশুদের দিতে হবে প্রত্যেকদিন। চলুন এই বিষয়ে কিছুটা বিস্তারিত আলোচনা করে নেওয়া যাক।
১) সবুজ শাক-সবজি: উচ্চতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে হাড় মজবুত করার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি খাদ্য হলো সবুজ এবং তাজা শাকসবজি। হাড়ের ঘনত্ব বাড়ানোর জন্য সহায়তা করে যে কোন ধরনের শাক।
২) ব্রকলি: মস্তিষ্কের গঠন এবং শরীরের সামগ্রিক বৃদ্ধির সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত সমস্ত হরমোনের ভারসাম্য নিয়ন্ত্রণ করতে পারে ব্রকলি তাই ছোটবেলা থেকেই আপনার শিশুকে ব্রকলি খাওয়াতে পারেন আপনি।
৩) বিনস: প্রোটিন, ফাইবার, ম্যাগনেসিয়াম, আয়রণ এবং পটাশিয়ামে সমৃদ্ধ বিনস বাচ্চাদের জন্য ভীষণভাবে উপকারী। প্রতিদিন খাবার তালিকায় বিনস দিয়ে তৈরি বিভিন্ন পদ রান্না করার চেষ্টা করুন।
৪) ডিম: শিশুদের সামগ্রিক বৃদ্ধির জন্য ডিমের ভূমিকা অপরিহার্য। চিকিৎসকদের মতে, একটি শিশু যদি রোজ চারটি করে ডিম খায় সে ক্ষেত্রেও তার কোন ক্ষতি হয় না বরং লাভ হয়।
৫) দুধ: আমরা সকলেই জানি দুধে যে পরিমাণ ক্যালসিয়াম রয়েছে, তা আর অন্য কোথাও পাওয়া যায় না। তাই শিশুদের দুধ খেতে যদি সমস্যা না থাকে তাহলে প্রত্যেকদিন অবশ্যই দুধ খাওয়াতে পারেন আপনার শিশুকে।
৬) গাজর: ফাইবার এবং ভিটামিন এ ভরপুর গাজর শিশুদের দৃষ্টি শক্তি উন্নত করে, পাশাপাশি লম্বা হতে সাহায্য করে।
৭) মাংস: বাড়িতে তৈরি মুরগির মাংসের পদ খাওয়ার পরামর্শ দেন পুষ্টিবিদরা। মাংসের মধ্যে রয়েছে প্রোটিন এবং ভিটামিন বি ১২। এগুলি শিশুদের শারীরিক গঠনের উন্নতি ঘটাতে সাহায্য করে।