বিখ্যাত ব্যবসায়ী গৌতম আদানি (Goutam Adani) হলেন এশিয়ার সবচেয়ে ধনী ব্যক্তিদের মধ্যে একজন। গৌতম আদানিকে সবাই চেনেন। এই স্থান অর্জনের জন্য তাঁকে অনেক প্রতিকূলতার সম্মুখীন হতে হয়েছে। বর্তমানে গৌতম আদানি বেশ বিপাকে পড়েছেন। আদানি গ্রুপের কোম্পানীগুলোর ঋণ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। হিন্ডেনবার্গের প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে যে, আদানি গ্রুপের ৭টি বড় তালিকাভুক্ত কোম্পানীগুলোকে ৮৫ শতাংশেরও বেশি মূল্যায়ন করা হয়েছে।
এর প্রভাবে আদানি গোষ্ঠীর শেয়ারের দাম বেশ ভালো মাত্রায় পড়ে যেতে থাকে। গত শুক্রবার তা প্রায় বিপর্যয়ের কাছাকাছি চলে যায়। পরিস্থিতি থেকে উদ্ধার পেতে আদানিরা শেয়ারের দাম হয়তো কমিয়ে দিতে পারতেন, কিন্তু তাতেও পরের সপ্তাহে শেয়ারের দাম পড়ে যাওয়া আটকানো যেত না। সমস্যা কোনো না কোনোভাবে তৈরি হতই। এতে বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তিদের মধ্যে অন্যতম গৌতম আদানির বিড়ম্বনা যেমন প্রকট হয়ে উঠল, তেমনই পরবর্তী কালে এর পরোক্ষ প্রভাব পড়তে পারে তাঁর সংস্থা সহ বৃহত্তর শেয়ার বাজারে। আদানির শেয়ারের দাম বিগত কয়েক মাস ধরেই নিম্নগামী হয়ে রয়েছে।
২০২২ সালে গ্রুপ কোম্পানীর শেয়ার বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রায় শীর্ষ ছুঁয়ে ফেলে। তারপর থেকে প্রায় ৩৫ শতাংশ পতন লক্ষণীয় হয়ে ওঠে, আবার কখনো তা ৪৫ শতাংশেও পৌঁছায়। শুক্রবারের ক্ষতির পরিমাণ সব থেকে বেশি। পর পর ৩ বছর ‘আদানি এন্টারপ্রাইজেস’ ২০২১-২২ সালে ৭৫ শতাংশ রাজস্বের মুখ দেখেছিল, কিন্তু তার মোট লাভের পরিমাণ সেই বছরেই কমে আসে এবং মোট বিক্রির ১.৫ শতাংশ হয়ে দাঁড়ায়। গোষ্ঠীর তালিকাভুক্ত ৭টি সংস্থার ৬টিরই ২০২২ সালের মার্চ পর্যন্ত কর প্রদানের আগের লভ্যাংশে সামান্য খামতি দেখা গিয়েছিল। একমাত্র ব্যতিক্রম ছিল ‘আদানি পাওয়ার’, যা রাজস্বের ক্ষেত্রে সামান্য বৃদ্ধি সহ ১৮৭ শতাংশের বেশি লাভ পেতে সমর্থ হয়েছিল।
রিয়্যাল-ওয়ার্ল্ড ভ্যালুয়েশন শুধুমাত্র দেখা গিয়েছে ‘আদানি পাওয়ার’ এবং ‘আদানি পোর্টস’এর ক্ষেত্রে। ২০০৮ সালে যখন অনিল আম্বানীর রিলায়েন্স পাওয়ার নিয়ে চড়া দামে শেয়ার ছাড়ার অভিযোগ তোলা হয়েছিল, সেই শেষ বারই এই ধরনের মূল্যায়ন দেখা গিয়েছিল। রিপোর্ট অনুযায়ী, আদানি গোষ্ঠীর মাঝারি মানের ব্যবসা এবং তার করা মূল্যায়নের পিছনে মূল কারণ ছিল, অধিকাংশ ব্রোকিং সংস্থার তরফে আদানিদের শেয়ারের বিষয়ে যথাযথ তথ্যানুসন্ধান না করা। বিক্ষিপ্ত কিছু তদন্ত শুরু হলেও সেই সবকিছুই চাপা পড়ে যায়।