আজ রতন টাটার জন্মদিন। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে শুভেচ্ছা বার্তা উড়ে আসছে রতন টাটার জন্য। আজ জন্মদিন উপলক্ষ্যে রতন টাটার জীবনের কিছু কথা বলবো, যা হয়ত এতদিন ছিল সকলের কাছেই অজানা। শৈশব থেকে সকলেই বড় বিজ্ঞানী অথবা ইঞ্জিনিয়ার, ডাক্তার হবার স্বপ্ন দেখে। কিন্তু সব স্বপ্ন কখনো পূরণ হয়না। এমন অনেক সময় আসে, যখন আমাদের চোখের সামনেই স্বপ্ন ভেঙে যায়। এমন পরিস্থিতিতে সময় অনুযায়ী কাজ করতে হবে আমাদের। এমন একজন সফল ব্যক্তিদের মধ্যে অন্যতম সফল বিজনেস টাইকুন রতন টাটা।
রতন টাটা বর্তমানে টাটা গ্রুপের চেয়ারম্যান। ১৯৩৭ সালের ২৮ ডিসেম্বর মুম্বাইতে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। ছোটবেলা থেকেই রতন টাটার স্বপ্ন ছিল একজন স্থপতি হবার। কিন্তু তাঁর বাবা চেয়ে ছিলেন যে ছেলে একজন ইঞ্জিনিয়ার হোক। অগত্যা রতন টাটা বাবার ইচ্ছা অনুযায়ী কাজ করেছিলেন।
১৯৫৯ সালে কর্নেল ইউনিভার্সিটি থেকে স্নাতক হবার পর তিনি স্থাপতি ক্ষেত্রে নিজের ক্যারিয়ার গড়তে শুরু করেন। তিনি বিশ্বাস করেছিলেন, স্থাপত্যের মাধ্যমে মানবতার গভীরতা বোঝা সম্ভব হয়। ঠিক এই কারনে স্থাপত্যবিদ্যা তাকে অনুপ্রাণিত করেছিল। একটি সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, আমার বাবা চেয়েছিলেন আমি একজন ইঞ্জিনিয়ার হই। বাবার ইচ্ছা মত আমি ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্স করি এবং ইন্টার্নশিপের জন্য টাটা স্টিলের জামশেদপুর প্ল্যান্টে আসি। আমি স্থপতি হতে পারিনি তার জন্য আমি কোনদিন আফসোস করি না। আমি আফসোস করি, ডিগ্রী অর্জন করার পরও কাজের পাশাপাশি আমি স্বপ্নের চাকরির জন্য অনুশীলন করতে পারিনি।
তরুণদের অনুপ্রাণিত করার জন্য রতন টাটা বলেছিলেন, জীবনে এমন অনেক সময় আসবে যখন আপনার ইচ্ছা অনুযায়ী কোন কিছু হবে না। কিন্তু তখন বিরক্ত না হয় সেই পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হবে আপনাকে। সময় যখন অনুকূল হয় তখন যা খুশি তাই করতে পারেন আপনি। কিন্তু সময় যখন বিপক্ষে যায় তখন মাথা ঠান্ডা করে রাখাটাই বুদ্ধিমানের বিষয়ে।
১৯৬১ সালে রতন টাটা টাটা গ্রুপে যোগদান করেন। ১৯৯১ সালে টাটা গ্রুপের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন তিনি। ২০১২ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত তিনি টাটা গ্রুপের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। বর্তমানে তিনি টাটা গ্রুপের অন্তর্বর্তী চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। ২১ বছরে রতন টাটার নিজের কোম্পানিকে বিশ্বের কাছে এক নম্বর কোম্পানি হিসেবে দাঁড় করিয়েছিলেন। আজ সারা বিশ্বে বহু সংস্থা তৈরি হয়েছে টাটা। রতন টাটার অন্যতম একটি স্বপ্ন পূরণ হয়েছিল তা হল ন্যানো গাড়ি। তিনি সাধারণ বুদ্ধিজীবীদের জন্য এই গাড়ি নিয়ে এসেছিলেন যা প্রত্যেক সাধারণ মানুষের সাধ্যের মধ্যে ছিল।