সারা বিশ্বজুড়ে করোনা মহামারী চলছে। বহু দেশে এখন মৃত্যু-মিছিল অব্যাহত। এর পাশাপাশি আরও একটি বিষয় নিয়ে চিন্তিত ছিল বিজ্ঞান মহল। ওজোন স্তরে দেখা দিচ্ছিল বিরাট ক্ষত। এই ক্ষত দেখা দিয়েছিল উত্তর গোলার্ধের উপরের ওজোন স্তরে।প্রায় 10 লক্ষ বর্গকিলোমিটার জুড়ে দেখা দিয়েছিল এই ক্ষত। এই বিশাল ক্ষতের কারণে পৃথিবীতে কী মহাসংকট আস্তে চলে ছিল সেই সম্পর্কে আতঙ্কিত ছিল সারা বিজ্ঞান মহল। কিন্তু কথায় আছে পৃথিবী তার নিজের রক্ষা উপায় নিজেই খুঁজে নেয়।
বর্তমানে করোনা সংক্রমণের জন্য সারাবিশ্বে চলছে লকডাউন। গাড়ি-ঘোড়া থেকে শুরু করে কলকারখানা প্রায় সবই বন্ধ রয়েছে বর্তমানে। এর ফলে আগের তুলনায় দূষণ অনেকটা কমে গিয়েছে। এছাড়াও জলবায়ু পরিবর্তন দেখা দিয়েছে। সব মিলিয়ে ধীরে ধীরে সেরে উঠছে ওজোন স্তরের ক্ষত।আপনাদের জানিয়ে দি পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের উপরিভাগে অর্থাৎ যেটাকে স্ট্রাটোস্ফিয়ার বলা হয় সেখানে ওজোন গ্যাসের একটা পাতলা চাদর আছে। এই পাতলা চাদর এর গুরুত্ব অপরিসীম।
এই পাতলা চাদর টিকে ভেদ করে সূর্যের আলো খুব সহজে ঢুকে যেতে পারে কিন্তু সূর্যের আলো থেকে আসা ক্ষতিকর অতিবেগুনী রশ্মি এই পাতলা চাদর ভেদ করতে পারে না। পৃথিবীকে এই ক্ষতিকর অতিবেগুনি রশ্মি থেকে রক্ষা করে পাতলা চাদর টি। কিন্তু পৃথিবীতে ধীরে ধীরে যা দূষণের পরিমাণ বাড়ছে তাতে এই পাতলা চাদর এর উপর ক্ষতের সৃষ্টি হচ্ছে। কিন্তু বিশ্বজুড়ে লকডাউন চলার কারণে বিজ্ঞানীদের দাবি এই ক্ষত সেরে উঠেছে। আর আশঙ্কার কোন কারণ নেই।
কেন এই ক্ষত সৃষ্টি হয়েছিল এবং তা কীভাবেই বা সারলো সেই সম্পর্কে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। এ সম্পর্কে ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সি এবং কোপার্নিকাস অ্যাটমসফিয়ার মনিটরিং সার্ভিস জানিয়েছে, ওজোন স্তরে এই ক্ষত তৈরি জন্য দায়ী ছিল মানুষের দ্বারা দূষণ। বিজ্ঞানীরা জানিয়েছিলেন, শিল্প কল-কারখানা ও আধুনিক জীবনের সুবিধা নিতে গিয়ে মানুষ নিজের হাতে এই স্তরটিকে ফুটো করে ফেলেছে। উত্তর এবং দক্ষিণ এই দুই মেরুতে ওজোন স্তর ফুটো হয়ে গেছে। ওজোন স্তরের এই দুরবস্থার জন্য দায়ী, ক্লোরোফ্লোরোকার্বন, ব্রোমিন, ক্লোরিন গ্যাস, মিথাইল ক্লোরোফর্ম, মিথাইল ব্রোমাইড ইত্যাদি উপাদান।
The unprecedented 2020 northern hemisphere #OzoneHole has come to an end. The #PolarVortex split, allowing #ozone-rich air into the Arctic, closely matching last week's forecast from the #CopernicusAtmosphere Monitoring Service.
More on the NH Ozone hole➡️https://t.co/Nf6AfjaYRi pic.twitter.com/qVPu70ycn4
— Copernicus ECMWF (@CopernicusECMWF) April 23, 2020
বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, বর্তমানে জৈব ও রাসায়নিক দূষণের দাপট কম হওয়ার কারণে ক্লোরোফ্লোরো -কার্বন কম নির্গত হচ্ছে। ফলে ধীরে ধীরে ওজোন স্তরের ক্ষত সেরে উঠছে। 1987 সালে সিএফসি গ্যাসের ব্যবহার কমানোর জন্য সারাবিশ্ব একসঙ্গে মন্ট্রিয়ল চুক্তিতে সই করে। সেখানে সিএফসি ব্যবহারে বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এর ফলে 2000 সাল থেকে প্রায় 40 লক্ষ বর্গকিলোমিটার পরিমাণ কমেছে ওজোন এর ফুটো।