মুক্তির আগেই আমির খান অভিনীত লাল সিং চাড্ডা মানুষের ঘৃণার পাত্র হয়েছে। সিনেমাটি ঘিরে বয়কটের ডাক তুলেছে সাধারণ মানুষ এবং এক সপ্তাহ ধরে সিনেমাটি এবং আমির খানকে ঘিরে তৈরি হয়েছে বিতর্ক। আমির খানের পুরনো একটি বক্তব্যকে ঘিরে এই বয়কটের ডাক দেওয়া হয়েছে। যদিও আমির খান সম্পর্কে একটি সাক্ষাৎকারে সকলের কাছে ক্ষমা চেয়ে বারবার এই সিনেমা প্রেক্ষাপটে গিয়ে দেখার আর্জি জানিয়েছেন। অভিনেতার আবেদনে কতখানি সাধারণ মানুষ সাড়া দেবে তার সময় বলতে পারবে। তবে আজ এই প্রতিবেদনে আপনাকে বলব আমির খান অভিনীত লাল সিং চাড্ডা সিনেমার আগেও একাধিক সিনেমা ঘিরে এই বয়কটের ডাক দেওয়া হয়েছিল। চলুন জেনে নেওয়া যাক সেই সিনেমার একটি তালিকা
গাঙ্গু বাই কাটিয়াবাড়ী: এই সিনেমাটিতে কামাথিপুরার যৌনকর্মী গাঙ্গুবাই – এর জীবন তুলে ধরা হয়েছিল। সিনেমাতে অসাধারণ কাজ করেছিলেন আলিয়া ভাট কিন্তু সিনেমা ট্রেলার প্রকাশের পর সিনেমাটি বয়কট করার দাবি জানিয়েছিলেন সাধারণ মানুষ। এতকিছুর পরেও সিনেমাটি যখন প্রেক্ষাপটে মুক্তি পায় তখন সারা বিশ্ব জুড়ে ২০০ কোটি টাকা রোজগার করেছিল এই সিনেমাটি।
সূর্যবংশী: রোহিত সেট্টি পরিচালিত সূর্যবংশী সিনেমাটিও তীব্র বিরোধিতা করেছিলেন পাঞ্জাবের কৃষক সংগঠন। সিনেমাটি পরবর্তীকালে যখন মুক্তি পায় তখন সিনেমাটি ১৯৬ কোটি টাকার ব্যবসা করেছিল সারা বিশ্বজুড়ে।
ছাপাক: এই সিনেমাটি CAARC বিরোধী বিক্ষোভ এবং ছাত্রদের উপর পুলিশি বর্বরতার আঙ্গিকে তৈরি করা হয়েছিল। এই সিনেমার অন্যতম অভিনেত্রী দীপিকা পাডুকোন জহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয় পরিদর্শন করেছিলেন যেখানে তিনি ছাত্র বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেছিলেন। এই ঘটনার পর অনেকে দাবী করেছিলেন বিরোধী দল থেকে সিনেমার অভিনেতা অভিনেত্রীদের বেতন দেওয়া হচ্ছে এবং বিজেপি নেতা তাজিনদার পাল সিং বাগগা টুইটারে এই সিনেমার বয়কটের দাবি দিয়েছিলেন
পদ্মাবত: সঞ্জয় লীলা বানচালি পরিচালিত এই সিনেমাটি সেই কয়েকটি সিনেমার মধ্যে একটি যার জন্য মানুষ রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ করেছিল। সিনেমার প্রধান অভিনেত্রী দীপিকা পাড়ুকোনকে মেরে ফেলার হুমকিও দেওয়া হয়েছিল। তবে এতকিছুর পরে এই সিনেমাটি যখন প্রেক্ষাপটে মুক্তি পায় তখন প্রায় ৫৭০ কোটি টাকার ব্যবসা করেছিল।
বাজিরাও মস্তানি: সঞ্জয় লীলা বনশালি পরিচালিত বাজিরাও মাস্তানি যখন মুক্তি পায় তখন সমালোচকরা দাবি করেছিলেন, এই চলচ্চিত্রটিতে ইতিহাসকে বিকৃত করা হয়েছে। তবে বয়কটের দাবি তুললেও এই সিনেমাটি মুক্তির পর ৩৫০ কোটি টাকার ব্যবসা করেছিল।
পিকে: ৮৫ কোটি টাকার বাজেট নিয়ে তৈরি হয়েছিল এই সিনেমাটি। তবে এই সিনেমাটির বিরুদ্ধে মানুষ ক্ষিপ্ত হয়েছিল একটি কারণে কারণ সিনেমাটিতে হিন্দু ভাবাবেকে আঘাত করা হয়েছিল। কিন্তু তা সত্ত্বেও এই সিনেমাটি ৮৫৪ কোটি টাকা আয় করেছিল এবং অন্যতম একটি সেরা সিনেমা হিসেবে নিজেকে প্রমাণিত করতে পেরেছিল।
রামলীলা: সঞ্জয় লীলা বানশালী পরিচালিত রামলীলা মুক্তির আগেই বিতর্কে জড়িয়ে পড়েছিল। ধর্মীয় অনুভূতিকে আঘাত করার অভিযোগে সিনেমার পরিচালক এবং তারকাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছিল আদালতে। কিন্তু এত কিছুর পরেও সিনেমাটি বক্স অফিসে ২০০ কোটি টাকার বেশি আয় করেছিল।
দঙ্গল: আমির খান অভিনীত এই সিনেমা মুক্তির আগেই আমির খানের একটি মন্তব্য ঘিরে তৈরি হয়েছিল বিতর্ক। এটি সাক্ষাৎকারে আমির খান বলেছিলেন, ভারতে থাকতে তিনি ভীষণভাবে ভয় পাচ্ছেন তাই ভারত ছেড়ে চলে যেতে ইচ্ছা করে তার। আমির খানের এই বক্তব্য একেবারেই মেনে নিতে পারেননি তার ভক্তরা এবং এই সিনেমাটি বয়কট করার দাবি জানানো হয়েছিল। তবে এতকিছুর পরেও এই সিনেমাটি বেশ হিট হয়েছিল বক্স অফিসে।
মাই নেম ইজ খান: শাহরুখ খান এবং কাজল অভিনীত মাই নেম ইজ খান মুক্তির আগে শাহরুখ খান একটি বিবৃতিতে আইপিএলে পাকিস্তানি খেলোয়াড়দের নির্বাচনের কথা বিষয়ে কথা বলেছিলেন। এরপরই শাহরুখ খান বিতর্কে জড়িয়ে পড়েন এবং পাশাপাশি মাই নেম ইজ খান টার্গেটে চলে আসে। দেশের বিভিন্ন স্থানে শাহরুখ খানের কুশপুত্তলিকা দাহ করা হয়। তবে এতকিছুর পরেও সিনেমাটি ২২৩ কোটি টাকা আয় করেছিল।