সম্প্রতি ভারতে ধীরে ধীরে ছড়ানো ভাইরাস কাটানোর জন্য 21 দিন সারা দেশ জুড়ে লকডাউন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।বিশেষজ্ঞ দের মতে, করোনাভাইরাস ভারতে কতটা পরিমানে ছড়াচ্ছে তা আগামী 7 থেকে 10 দিনের মধ্যে ভালোভাবে বোঝা যাবে। তারা এটাও জানিয়েছেন যে, করোনা সংক্রমিত রোগের উপসর্গ ফুটে আসতে পাঁচ থেকে 10 দিন সময় লাগে। ফলে কতটা পরিমাণ মানুষ করোনাতে আক্রান্ত হয়েছে তা আজ থেকে ঠিক পাঁচ থেকে দশ দিনের ভিতরে জানা যাবে।
লকডাউন এর সিদ্ধান্তের ফলে ভারতে করোনা সংক্রমণ আটকানো আদৌ কি সম্ভব তা বোঝা যাবে আজ থেকে 7 থেকে 10 দিন পর। এর পাশাপাশি স্বাস্থ্যমন্ত্রকের তরফ থেকে জানানো হয়েছে যে, ভারত বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সঙ্গে হাত মিলিয়ে ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এছাড়াও করোনা পরীক্ষার জন্য দেশীয় প্রযুক্তিতে কিট বানানোর কাজ চলছে। এমস-এর চিকিৎসক প্রসূন চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, আমাদের আশেপাশে অনেক ব্যক্তি এই ভাইরাসে আক্রান্ত কিন্তু তাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি থাকার কারণে উপসর্গ তাদের মধ্যে দেখা যায়নি।
কিন্তু তিনি অজান্তে আরো যাদের সংক্রমিত করছেন, তাদের মধ্যে কারো রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম হলে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে নতুনভাবে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে যেতে পারে। কারণ প্রায় 90% ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে করোনার উপসর্গ দেখা দিচ্ছে 7 থেকে 10 দিনের মাথায়। তবে 21 দিনের লকডাউন সিদ্ধান্তকে পুরোপুরিভাবে মানলে এই সংক্রমণ অনেকটা রোখা যাবে বলে মনে করেছেন তিনি। প্রসূন বাবু সহ আরো বিশেষজ্ঞদের মতে, গোষ্ঠী সংক্রমণ রোখতে পারলে করোনার সংক্রমণ রোখা যাবে।
কারণ গোষ্ঠী পর্যায় যদি একবার এই ভাইরাস ছড়িয়ে যায় তাহলে তাকে আটকানো প্রায় অসম্ভব ব্যাপার হয়ে উঠবে। তাই গোষ্ঠীর সংক্রমণ আটকানোর জন্যই মোদি সরকার সারাদেশে 21 দিনের লকডাউন ঘোষণা করেছেন। তবে চিকিৎসকসহ বিশেষজ্ঞরা বলেছেন সরকারের এই লকডাউন এর সিদ্ধান্ত নেওয়া কিছুটা হলেও দেরি হয়ে গেছে। ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিক্যাল রিসার্চের পদস্থ কর্তা রমন গঙ্গা খেদকর জানিয়েছেন, ‘ এখনো পর্যন্ত গোষ্ঠী সংক্রমণের প্রমাণ মেলেনি তাই সরকারের লকডাউনের সিদ্ধান্ত কিছুটা হলেও লাভ হয়েছে।
এই লকডাউন কতটা সফল হবে তা পুরোপুরি নির্ভর করছে আমাদের ওপর। আমরা যদি ঘরের মধ্যে থেকে গোষ্ঠী সংক্রমণকে রুখতে পারি তাহলে করোনার বিরুদ্ধে আমরা জিতে যাব। তিনি আরো জানিয়েছেন, ইতিমধ্যে বিভিন্ন দেশ করোনা ভাইরাসের ভ্যাকসিন আবিষ্কারের কাজ শুরু করে দিয়েছে। আর এতে ভারত ও অংশীদার হতে রাজি হয়েছে। যেহেতু প্রথমে ভারতে এই ভাইরাস প্রভাব ফেলেনি তাই এই সম্পর্কে ভারত অতটা আগ্রহ দেখায় নি প্রথম দিকে। কিন্তু পরে যখন ভারতেও দিন দিন আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে থাকে তারপর ভারত ও এই বিষয়ে অংশ নিতে রাজি হয়েছে।