Skip to content

ভারতের MARCOS বাহিনী সম্পর্কে এই অজানা তথ্য গুলি জানলে আপনিও চমকে যাবেন।

আমাদের দেশের বিভিন্ন ফোর্স এর জওয়ানেরা অন্যান্য দেশের তাবড় তাবড় জাওয়ানদের সঙ্গে লড়াই করার ক্ষমতা রাখে। তাতে  হিমালয় হোক বা সমুদ্রে সব জায়গাতেই ভারতীয় সেনারা অন্যান্য দেশের সেনাদের  থেকে এগিয়ে রয়েছে। এমনই একটি ভারতীয় নৌ-বাহিনী হল ‘মার্কোস’ বাহিনী। এই বাহিনী হল বিশ্বের সবথেকে অন্যতম সেরা বাহিনী। এদের কাছে বিশ্বের সমস্ত রকম আধুনিক অস্ত্রশস্ত্র থাকে। তবে এই মার্কোস বাহিনীর সদস্য হওয়া খুব একটা সহজ ব্যাপার নয়। এই বাহিনীর সদস্য হতে গেলে মানসিক এবং শারীরিক দিক থেকে নিজের ক্ষমতা প্রকাশ করতে হবে, তবে এই বাহিনীর সদস্য হওয়া যাবে। যা সাধারণ মানুষের পক্ষে করা অসম্ভব ব্যাপার। ট্রেনিং শেষ হয়ে যাবার পর মাত্র 5% মানুষ কে এই বাহিনীতে যুক্ত করা হয়।

এই বাছাইয়ের পরিমাণে বুঝা যাচ্ছে যে এই ট্রেনিং কতটা কঠিন হয়।এই বাহিনীর জওয়ানেরা সমস্ত ধরনের পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে সক্ষম হন। সন্ত্রাস দমন জলের তলায় যুদ্ধ করা এমন কি পণ বন্দীদের উদ্ধার করতে সক্ষম হয়ে থাকেন এই বাহিনী। আসুন এবার আমরা জেনে নি মার্কোস বাহিনী সম্বন্ধে কিছু অজানা তথ্য –
1. এই বাহিনী প্রথম তৈরি হয়েছিল 1985 সালে। তখন এই বাহিনীর নাম ছিল Indian Marine Special Forces (IMSF). তার দুবছর পর নাম বদলে নতুন নাম দেওয়া হয় Marine Commando Force (MCF).

2. এই বাহিনীতে যোগ দিতে গেলে কমপক্ষে দুই থেকে তিন বছরের ট্রেনিং পাশ করতে হয়।

3. কোন ব্যক্তি এই ট্রেনিং নেওয়ার জন্য যোগ্য কিনা সেটা দেখার জন্য তার আগে প্রি-ট্রেনিং করা হয়। শুধু এটাই নয় তিন দিন ধরে শারীরিক পরীক্ষা চলে। এই সমস্ত কিছু প্রক্রিয়া করার পর প্রায় 80% আবেদনকারী এখানেই বাদ হয়ে যায়। এরপর পাঁচ সপ্তাহের বিশেষ ট্রেনিং দেওয়া হয়।  এই ট্রেনিং থেকে বলা হয় ‘হেল-উইক’। এই বিশেষ ট্রেনিং এ ঘুমাতে পর্যন্ত দেওয়া হয় না। মানসিক এবং শারীরিক দিক থেকে চাপে রাখা হয়। এর পরও যারা এই ট্রেনিং থেকে চালিয়ে যায় তারা একমাত্র চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছায়।

4. মুম্বাই এর আইএনএস অভিমুন্য তে এদের প্রথম ট্রেনিং শুরু হয়। এরপর আগ্রায় প্যারাট্রুপারের  ট্রেনিং দেওয়া হয়। এরপর সবথেকে শেষে কোচির ডাইভিং স্কুলে তাদের ট্রেনিং দেওয়া হয়।

5. প্রাথমিক ট্রেনিং শেষ হয়ে যাবার পর তাদের অ্যাডভান্স ট্রেনিং শুরু হয়। হাইজ্যাকিং, জঙ্গি হানা যুদ্ধের মতো আরও বিভিন্ন কঠিন পরিস্থিতির মোকাবিলা করার ট্রেনিং দেওয়া হয় তাদেরকে।

6. এছাড়াও প্যারা জাম্পিং এর পাশাপাশি ‘ফ্রিং ফল’ -এর জন্য অনেকে নির্বাচিত হয়ে থাকেন। অনেক বেশি উচ্চতা থেকে চওড়া ও সরু জায়গায় ঝাঁপ দেওয়ার ও ট্রেনিং দেওয়া হয় এই সময়। বীর সারা বিশ্বের কয়েকটি সেনাবাহিনীর মধ্যে এই মার্কোস বাহিনী সমস্ত  অস্ত্রশস্ত্র পিঠে নিয়ে প্যারা ড্রপিং এর মাধ্যমে সমুদ্রে ঝাঁপ দিতে সক্ষম।

7. এই মার্কোস বাহিনীদের হাই অলটিটিউড কমান্ডো কোর্স এর ট্রেনিং দেওয়া হয় অরুণাচলের প্রভাত ঘটক স্কুলে। মরু যুদ্ধ শেখানো হয় রাজস্থানের ডেজার্ট ওয়ারফেয়ার স্কুলে, শুধু এই নয় এই বাহিনীকে মিজোরামের জাংগল ওয়ারফেয়ার স্কুলে জঙ্গি দমন শেখানো হয়।

8. এই মার্কোস বাহিনী মার্কিন সেনাবাহিনীর SEAL কোর্সে  সবার প্রথমে জায়গা করে নিয়েছে।

9. এই বাহিনীর আরেকটা বিশেষত্ব রয়েছে এই বাহিনীতে একজন ব্যক্তি তিন থেকে পাঁচ বছর  থাকতে পারে।

10. এই বাহিনীর কাছে বিশ্বের সবথেকে আধুনিকতম অস্ত্রশস্ত্র থাকে। এই বাহিনীর কাছে থাকে ইজরায়েলের Tavor TAR-21 যার সঙ্গে গ্রেনেড লঞ্চার যুক্ত থাকে। এই অস্ত্র দিয়ে জলের তলা থেকে আচমকা উঠে শত্রুদের উপর হানা দিতে সাহায্য করে।

11. Tavor TAR-21 ছাড়াও এই বাহিনীর কাছে আরো আধুনিকতম অস্ত্র রয়েছে যেমন, Heckler & Koch MP5 মেশিন গান, SIG Sauer P226 ও Glock 17 পিস্তল এবং রয়েছে Druganov ও Galil স্নাইপার রাইফেল।

12. খুবই কঠিন থেকে কঠিনতম অপারেশন ক্ষেত্রে এই বাহিনীর সাহায্য নেওয়া হয়। একবার এই বাহিনী জাফনা জেটি দখলের জন্য 12 কিলোমিটার সাঁতরে যান। এরপর বন্দরে বিস্ফোরক নিয়ে উঠে এবং খুব সহজেই সাঁতরে ফিরেও আসেন। সব থেকে অবাক হওয়ার বিষয় হলো কেউ ধরাও পড়েনি বা আহত হয়নি।

13. 1988 সালে অপ ক্যাকটাস নামের একটি বিশেষ অপারেশনে এই বাহিনীর উল্লেখযোগ্য ভূমিকা ছিল।

14. তবে কারগিলের যুদ্ধে মার্কোস বাহিনীর শত্রু দমনের এমন ভূমিকা নেই। 2008 সালের মুম্বাই হামলা তে মার্কোস বাহিনী জঙ্গি নিধন চালায়।

15. এই জঙ্গিদের একটি বিশেষ রূপ রয়েছে এরা দাড়ি লাগিয়ে নিজেদের মুখ ঢেকে রাখে। তাই জঙ্গিরা এই মার্কোস বাহিনীকে ‘দাড়িওয়ালা ফৌজ’ বলে ডাকে।