বাংলায় ঘটে যাওয়া চিটফান্ড কেলেঙ্কারি কে নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যে যে দ্বন্দ্ব ফেলেছে তা এখন চর্চার মুখে রয়েছে। এটা বলা ভুল হবে না যে, এই ঘটনা ঘটার পর থেকেই চিটফান্ড কেলেঙ্কারি নিয়ে তদন্ত এক নতুন পর্যায়ে এসে পৌঁছেছে এবং ইতিমধ্যে তদন্ত কাজ অনেক দ্রুত চলছে । আবার অন্যদিকে দেশের গণতন্ত্রকে বাঁচাতে মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দিল্লী পর্যন্ত ধর্না দিতে গেছেন। যেখানে একদিকে মোদি সরকার লোকসভায় অর্থনৈতিক বেআইনি সংস্থার উপর নিষেধাজ্ঞা আরো সংলগ্ন বিল পাস করেছে। আবার বিপরীতে কংগ্রেসের দলীয় সাংসদ অধীর চৌধুরী এই বিলকে কেন্দ্র করে বলেছেন, আমি এই বিলকে সমর্থন করি, কারণ বাংলায় বেসরকারি চিটফান্ড সংস্থা গুলি বাংলার লক্ষ লক্ষ মানুষের টাকা নিয়ে তাদের সর্বশান্ত করেছে।
আর তার মধ্যেই অধীর চৌধুরীর সাথে তৃণমূলের নেতারা দাঁড়িয়ে মোদি সরকারের বিরুদ্ধে স্লোগান তুলেছিলেন। যেখানে কংগ্রেসের প্রার্থী অধীর চৌধুরী মোদির পক্ষে কথা বলছেন, উল্টোদিকে তৃণমূল তার বিরোধিতা করেছে। আর সেই মুহুর্তেই অধীর চৌধুরী হুংকারে বলে ওঠেন,” যারা এতদিন চোর চোর করে চিৎকার করছিলেন তারাই প্রকৃত চোর । কারণ , “চোর মাচায় শোর” । বাংলায় প্রচুর গরিব দরিদ্র মানুষের টাকা লুট করা হয়েছে তাই আমি এই বিলকে সমর্থন করছি। শুধু তাই নয়, বিজেপি সদস্যরা সবাই বেঞ্চ চাপড়ে অধীরের বক্তৃতার সমর্থন করলেন । আর যখন লোকসভায় পুরো চেঁচামেচির মহল গড়ে উঠেছে তখন অর্থমন্ত্রী পীযূষ গোয়েল হেসে হেসে দৃশ্য উপভোগ করছিলেন। অপরদিকে সোনিয়া গান্ধী নিশ্চুপ হয়ে অধীর চৌধুরী দিকে তাকিয়ে থাকলেন। শুধু অধীর চৌধুরী বললে ভুল হবে , তার সাথে সিপিএমের একজন নেতা মহম্মদ সেলিম এই বিলের সমর্থন করেছেন।
আবার উল্টোদিকে এই দিল বিতর্কে প্রাক্তন তৃণমূল মন্ত্রী সৌগত রায় এই বিল সম্পর্কে জানিয়েছেন,” এই চিটফান্ড কেলেঙ্কারি আঠারো শতক থেকে হয়ে আসছে তৃণমূল সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই এই সব চিটফান্ড বন্ধ করে দেওয়া হয়। আবার অনেক কেলেঙ্কারির সাথে যুক্ত ব্যাক্তিরা গ্রেফতার হয়েছেন। শেষমেষ লোকসভার কান্ড দেখে রেগে যান নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। লোকসভার বৈঠক সম্পূর্ণ শেষ হলে বাইরে সোনিয়া গান্ধীর সাথে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দেখা হলে , তিনি সোনিয়া গান্ধীকে অভিযোগ সহকারে বলেন,”লোকসভায় অধীর চৌধুরী যেটা করেছেন, সেটা ঠিক হলো না । এরপর কিভাবে কংসের সাথে সম্পর্ক থাকবে তৃণমূলের ?
এ প্রসঙ্গে সোনিয়া গান্ধী হালকা শব্দে বলে উঠেন, “তৃণমূল যেমন বাংলায় কংগ্রেসের বিরুদ্ধে প্রশ্ন তুলেছে , ঠিক তেমনই কংগ্রেস ও তৃণমূলের বিরুদ্ধে প্রশ্ন তুলেছে। যদিও রাজনীতি মহলে আমরা একে অপরের বন্ধু । আর সোনিয়া গান্ধীর এই বক্তব্য শুনে দিদি আরও রেগে যান , তিনি বলেন,’ ঠিক আছে আমিও মনে রাখবো’।
যদিও এক কালে বাংলায় তৃণমূল কংগ্রেসের জোট ছিল তারপর তৃণমূল কংগ্রেসের ভাঙ্গন সেই জোটের সমাপ্তি ঘটে। আর ইতিমধ্যে জোটে চেষ্টা চালালেও সভাপতি রাহুল গান্ধী তেমনভাবে তৃণমূলকে পছন্দ করেন না। আর তার কারণ হলো, বাংলাতে অনেকবারই কংগ্রেসের বিরুদ্ধে তৃণমূলের নেতা নেত্রীরা ক্ষোভ তুলে ধরেছেন। শুধু তাই নয়, তৃণমূল সাংসদদের নিজের দলে টেনে নেওয়ার অভিযোগ তুলেছেন কংগ্রেসের বিরুদ্ধে। তাই হয়তো তৃণমূল নেতারা মনে ভাবছেন, যেহেতু সোনিয়া গান্ধী লোক সভায় উপস্থিত ছিলেন , তাই হয়তো সোনিয়া গান্ধী অধীর চৌধুরীর বক্তব্যের সমর্থন করেছেন।