Skip to content

আপনি কী জানেন আপনার অজান্তে কিভাবে ঠকাচ্ছে পেট্রল পাম্পগুলি আপনাকে?জানলে আপনিও রেগে লাল হয়ে যাবেন।

যত দিন যাচ্ছে তত পেট্রোল বা ডিজেলের দাম আকাশছোঁয়া হচ্ছে।এরকম হারে যদি পেট্রোল-ডিজেলের দাম বাড়তে থাকে তাহলে আর কিছুদিনের মধ্যেই 100 এর গণ্ডিও টপকে যাবে পেট্রোল-ডিজেলের দাম। তেলের দাম বাড়ার সাথে সাথে দেশের প্রতিটি সরকারকে সমালোচনার মুখে পড়তে হয়। তবুও পেট্রোল-ডিজেলের দাম বাড়ানো থেকে আটকানো যায় না,কারণ অর্থনীতির মূল কথা হলো দিন দিন তা বৃদ্ধি পাওয়া। এই মূল্যবৃদ্ধির আটকানোর একটি রাস্তা হল আয়ের পরিমাণ বাড়িয়ে তার সাথে সামঞ্জস্য ভাবে চলতে হবে।আর তেলের সাথে যাবতীয় জিনিসের মূল্য বৃদ্ধি প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত আছে। তেল এর মাধ্যমে আমাদের দেশ ধীরে ধীরে এগিয়ে যাচ্ছে। কারণ পরিবহন ব্যবস্থাকে উন্নত করতে হলে আমাদের তেলের প্রয়োজন তাতে বিমান হোক,গাড়ি হোক। আর পরিবহন ব্যবস্থা যদি উন্নত না হয় তাহলে দেশ পুরোপুরি পিছিয়ে পড়বে।

আমরা হয়তো সবাই জানি পেট্রোল-ডিজেলের উৎস হল খনিজ তেল যা আমরা অনেকেই কাঁচা তেল নামে জানি। এই কাঁচা তেল বাইরের দেশ থেকে আমদানি করে এখানে পরিশুদ্ধ করা হয়। তারপর সেটাকে  পেট্রোল এবং ডিজেলের রূপান্তরিত করে ব্যবহার করা হয়। শুধু আমাদের দেশ বলে নয় বাইরের দেশেও এটা করা হয়।আন্তর্জাতিক বাজারে যদি তেলের দাম বাড়ে তাহলে এখানে আমাদের  দেশেও তেলের দাম বাড়তে বাধ্য। তবে অন্যান্য দেশের  তুলনায় আমাদের দেশে তেলের দাম অনেক বেশি এর একটি কারণ হলো ভারতের কর ব্যবস্থা। কিন্তু তেলের দাম যতই বাড়ুক তেল আপনাকে কিনতেই হবে,বিশেষ করে আবার যাদের বাড়িতে গাড়ি রয়েছে। তেলের মূল্য বৃদ্ধি হওয়ায় সমালোচনার সৃষ্টি হয় ঠিকই। কিন্তু আপনি এটা ভেবে দেখেছেন যে পেট্রোলপাম্পে আপনি তেল কিনছেন সেখানে আপনাকে কম তেল দিচ্ছে না যেটা দেওয়ার কথা ওটাই দিচ্ছে!

আপনাকে কী জানেন এই দেশে প্রায় হাজার ষাটেকের ওপর পেট্রোলপাম্প রয়েছে। আমাদের দেশে প্রতিদিন জ্বালানির খরচ 130 কোটি লিটার। এবার ভাবুন প্রতিটি পেট্রোলপাম্পে প্রতিটি গ্রাহকের কাছ থেকে যদি 1ml করেও পেট্রোল বা ডিজেল চুরি করা হয় তাহলে কত লিটার হচ্ছে। এখন সবারই মনে একটাই প্রশ্ন কি করে চুরি করবে আমি সামনে দাঁড়িয়ে দেখছি আবার পেট্রোলপাম্পের কাটাও তো ভুল বলবে না?কিন্তু আপনাকে ঠকায়। ধরুন আপনি ফিলিং স্টেশনে গিয়ে বললেন 500 টাকার তেল দিতে। দিয়ে এ পাম্পের কর্মী আপনাকে 200 টাকার তেল দিয়ে বন্ধ করে দিল। দিয়ে আপনি সঙ্গে সঙ্গে বলে উঠলেন দাদা আমি তো 500 টাকার তেল দিতে বললাম। এই কথা বলায় পাম্পের কর্মীটি উনার সাথে আরো 300 টাকা অ্যাড করে তেল দিয়ে দিল আপনাকে। তখনই আপনি চুপ হয়ে গেলেন আপনি ভাবছেন আমি 500 টাকার তেল পেয়ে গেলাম। কিন্তু ওদের ওটাই লাভ হয়ে গেল। ফিলিং স্টেশনগুলোতে মেশিন গুলো এমনভাবে সেট করা থাকে যে কর্মীরা আপনার কাছ থেকে 1ml করে হলও মারবে। আপনি নিজের বাইকের কাটাতে এটা ধরতে পারবেন না।

এবার আপনি ভাবছেন সামান্যই তো মেরেছে একই আছে তাতে। তবে বলে রাখি ওই পেট্রোলপাম্পে শুধু আপনি তেল নিতে  জান এমনটা নয় আরও অনেক হাজার হাজার লোক আসে তেল নিতে। প্রতিদিনের ওই ছোট্ট ছোট্ট চুরি করে প্রায় হাজার ছ’য়েক টাকা চুরি হয়ে যায়। আপনি কষ্ট করে রোজগার করে  তেল কিনছেন কেনই বা সামান্য পরিমাণ তেল চুরি করতে দেবেন।ওরা ভালো করেই জানে আপনি 100, 200, 300, 400 এ রকমই রাউন্ড ফিগারে তেল কিনবেন। তাই ওদের মেশিন ও সেই ভাবেই সেট করা থাকে। কিন্তু আপনি যদি 125, 275,325 এরকম টাকার তেল কিনেন তাহলে আপনি পুরোটাই পাবেন।আবার উল্টো দিকে দেখতে গেলে আপনি 1 লিটার,2 লিটার,3 লিটার তেল না কিনে 1.75 লিটার 2.45,4.90 লিটার এরকম ফিগারের তেল কিনুন পুরোটাই পাবেন।এছাড়াও আপনি যখন ফিলিং স্টেশনে তেল কিনতে আসবেন তখন অন্যান্য দিকে মনোযোগ না  দিয়ে যেটা করতে এসেছেন সেদিকে মনোযোগ দেন।

নইলে আপনার অন্যমনস্কতার কারণেও কর্মীরা তেল চুরি করে দিতে পারে তারপর আপনি দেখবেন মিটারে ওই তেল এসে লক হয়ে গেছে। আপনি বাইকের অয়েল ট্যাংকারের কাঁটা খেয়াল না করে চলে গেলেন। ব্যাস ফিলিং স্টেশনে লাভ হয়ে গেল। এটাও মনে রাখবেন ওই পাইপে অনেকটা তেল থাকার জায়গা আছে।এবার আপনারা লক্ষ্য করবেন অনেক ফিলিং স্টেশনের কর্মীরা বার বার সুইচ অন-অফ করে। এখানেও তাদের চালাকি রয়েছে। কর্মীরা বলে থাকেন বেশি তেল চলে যাবে।কিন্তু মেশিনে যেমনটি সেট করে দেওয়া থাকবে ওই পরিমাণ তেল বেরোবো তার থেকে বেশি বেরোবে না তাই সুইচ অন-অফ করার বাহানা টি পুরোপুরি মিথ্যা। এছাড়াও তারা আরো একটি মারাত্মক পদ্ধতির দ্বারা তেল চুরি করে। সেটি হল মেশিনের চিপ লাগিয়ে রাখা। এর কাজ হল মেশিনে বেশি তেল দেখাবে কিন্তু আসলে ওই পরিমাণ তেল আপনার ট্যাংকে যাবে না। আর আপনি কিছু করতে পারবেন না। এটা বোঝার একমাত্র উপায় হল আপনি প্রথম একমাত্র লিটারের কোন বোতল নিয়ে যান। সেখানে এক লিটার তেল কিনুন এবং তারপর আপনার কেউ পরিচিত কে পাঠান তেল কিনতে ঐ ফিলিং স্টেশনে। যদি দেখেন পরিমাণটি মিলছে না তাহলে পুলিশকে খবর দেন এবং সে পাম্পের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে।