মাছ হলো আমিষভোজীদের খাদ্যের একটি প্রধান অংশ। যদিও মাছগুলোও এখন বিষাক্ত হয়ে পড়ছে। এনভায়রনমেন্টাল প্রোটেকশন এজেন্সি এবং ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন অফ আমেরিকার যৌথ সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে যে, আমেরিকার হ্রদ ও নদীর জল এতটাই দূষিত হয়ে গিয়েছে যে, সেখানে বসবাসকারী মাছও বিষাক্ত হয়ে পড়ছে। সায়েন্স ডাইরেক্টে প্রকাশিত একটি সমীক্ষায় দাবি করা হয়েছে যে, স্বাদুজলের মাছে ২৭৮ গুণ রাসায়নিক পাওয়া গেছে, যা মারাত্মক রোগের কারণ হতে পারে। একে বলা হয় পার অ্যান্ড পলিফ্লুরোলকিল সাবস্টেন্স।
এটি সেই রাসায়নিক, যা সাধারণত ননস্টিক বা জল প্রতিরোধী পোশাক, যেমন রেইনকোট, ছাতা বা মোবাইল কভারে পাওয়া যায়। এটি শ্যাম্পু, নেইলপলিশ এবং চোখের মেকআপেও অল্প পরিমাণে পাওয়া যায়। এটি বৃদ্ধি এবং হরমোনের উপর সরাসরি প্রভাব ফেলে। এর জন্য থাইরয়েড ও কোলেস্টেরলের মতো সমস্যা দেখা দেয়। এমনকি গর্ভবতী মহিলাদের মধ্যে এটি গর্ভপাতের কারণ হতে পারে। ২০১৭ সালে ইন্টারন্যাশনাল এজেন্সি ফর রিসার্চ অন ক্যান্সার স্পষ্টভাবে পিএফওএকে মানব কার্সিনোজেন বলে অভিহিত করেছে, যার অর্থ ক্যান্সারের সম্ভাবনা রয়েছে।
বিশেষ করে কিডনি ও টেস্টিস ক্যান্সার। আমেরিকার নদী এবং হ্রদগুলিতে টানা ৩ বছর ধরে একটি গবেষণার পর দেখা গেছে যে, এই রাসায়নিকটি জলে পাওয়া জীবগুলির মধ্যে ২,৪০০ গুণ বেশি পাওয়া যায়। বিজ্ঞানীরা এমনও বলেছেন যে, বছরে ৪ বার মাছ খেলে শরীরে পিএফএএস বিপজ্জনক স্তরে পৌঁছে যায়। এই প্যাটার্নটি আমেরিকার ৪৮টি রাজ্যে পাওয়া গেছে। সামগ্রিকভাবে এটি প্লাস্টিকের চেয়েও বেশি বিপজ্জনক বলে মনে করা হয় এবং এর কোনো শেষ নেই। পিএফএএসের ব্যবহার ১৯৪০ সাল থেকে শুরু হয়।
খাদ্য প্যাকেজিং এবং নন স্টিকের মাধ্যমে এর ব্যবহার বাড়তে থাকে, কারণ এটি তাপ, তেল এবং জল থেকে বেঁচে থাকে। এর স্থায়িত্ব পরিবেশের জন্য বিপজ্জনক প্রমাণিত হচ্ছে। এটি মাটি ও জলের মাধ্যমে মাছ ও বন্যপ্রাণীকে বিপদে ফেলছে। সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন ২০১৯ সালের একটি গবেষণায় বলেছে যে, প্রায় ৯৮ শতাংশ আমেরিকানদের দেহে এই রাসায়নিক রয়েছে, যার কারণ দূষিত জল এবং খাবার।