বলিউড ইন্ডাস্ট্রি সবথেকে বিশ্বাসযোগ্য এবং বর্ষার পাত্র হলেন আমির খান। গত তিন দশক ধরে তিনি একের পর এক দুর্দান্ত সিনেমা উপহার দিলেও বিগত কয়েক বছরে খুব কম ছবি তিনি উপহার দিতে পেরেছেন মানুষকে। দুর্দান্ত অভিনয়ের দ্বারা সর্বদা মনোরঞ্জন করে রেখেছেন এই অভিনেতা। শুধুমাত্র অভিনেতা হিসেবে নয় একজন পরিচালক হিসাবেও তিনি ভীষণ ভাবে সফল। তবে বর্তমানে সেই ভাবে আর তিনি জাদু দেখাতে পারছেন না বলিউড ইন্ডাস্ট্রিতে। আজ আমির খানের এমন কয়েকটি সিনেমার নাম জেনে নেব যা কোনদিন মানুষ ভুলতে পারবেনা।
আমির খানের পুরো নাম – হোল মোঃ আমির হোসেন খান। সব সময় নতুনত্ব কিছু তিনি আমাদের উপহার দিয়েছেন। একদিকে যেমন রয়েছে গজনীর মতো দুর্দান্ত থ্রিলার তেমন অন্যদিকে রয়েছে তারে জামিন পার – এর মত মন ভালো করে দেওয়া সিনেমা। নাসির হোসেনের ইয়াদো কি বারাত, সিনেমাতে শিশুশিল্পী হিসেবে অভিনয় জীবন শুরু করেছিলেন আমির খান। তবে পেশাগত ভাবে তিনি অভিনয় জীবনের সূচনা করেছিলেন ১৯৮৪ সালে হোলি সিনেমার হাত ধরে, এই সিনেমার নাম হয়তো অনেকেই জানেন না।
আমির খানের জীবনের টার্নিং পয়েন্ট এসেছিল কেয়ামত সে কেয়ামত তাক, সিনেমার হাত ধরে যেখানে শ্রেষ্ঠ নবাগত অভিনেতা হিসেবে ফিল্মফেয়ার পুরস্কার পেয়েছিলেন আমির খান। এই সিনেমার পর আর কার্যত পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি তাঁকে। পরবর্তীকালে জো জিতা ওহি সিকান্দার, সিনেমা বক্সঅফিসে তুমুল ঝড় তুলেছিল। সফল সিনেমার মধ্যে নাম রয়েছে সারফরাজ, মন, দিল, রঙ্গিলা, দিল হে কে মানতা নেহি- র মত সিনেমা। মাত্র এক বছর আগে দাঙ্গাল নামক একটি সিনেমার মাধ্যমে আরও একবার খ্যাতি শিরোনামে পৌঁছে গিয়েছিলেন আমির খান। তবে এবার সবথেকে শীর্ষে কোন সিনেমা রয়েছে আমির খান অভিনীত সিনেমা গুলি একবার দেখে নেবো আমরা।
গজনী: ২০০৮ সালে একেবারে নতুন একটি লুক নিয়ে সকলকে অবাক করে দিয়েছিলেন তিনি। চুল কেটে, সিক্স প্যাক অ্যাপস তৈরি করেছিলেন আমির খান। যতটা সম্ভব চরিত্রের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন তিনি। সিনেমাটি দক্ষিণ ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির একটি সিনেমার রিমেক হলেও অভিনয়ের ধারা এই সিনেমাটিকে আলাদা মাত্রা এনে দিয়েছিলেন অভিনেতা। টানটান উত্তেজনাপূর্ণ এই সিনেমাটি আমির খানের জীবনের অন্যতম সেরা সিনেমা।
থ্রি ইডিয়টস: চেতন ভগৎ লিখিত ফাইভ পয়েন্ট সামওয়ান, নামক একটি বইয়ের ওপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছিল এই সিনেমা। ২০০৩ সালে তৈরি এই সিনেমা যেন বর্তমান প্রজন্মের দিক থেকে বেশ কিছু প্রশ্ন ছুঁড়ে দেওয়া হয়েছিল সমাজের দিকে। আজও এই সিনেমাটি সর্বাধিক জনপ্রিয় সিনেমার মধ্যে অন্যতম।
তারে জামিন পার:২০০৭ সালে আমির খানের প্রযোজনায় মুক্তি পায় তারে জামিন পার। ডিসলেক্সিয়ায় আক্রান্ত একটি বাচ্চার গল্প তুলে ধরা হয় সকলের সামনে। এটিও আমির খান অভিনীত একটি অসাধারণ সিনেমা যা আজও আমাদের সকলকে মুগ্ধ করে। সিনেমাটি আরো বেশি জনপ্রিয় হয়েছিল তৎকালীন শিশু শিল্পী দর্শীল সফরির অসাধারণ অভিনয়ের জন্য। এই সিনেমাটি অ্যাক্যাডেমি আওয়ার্ডস, ন্যাশনাল অ্যাওয়ার্ড সহ আরো বহু পুরস্কার জিতে নিয়েছিল।
লাগান: ২০০১ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত এই সিনেমাটি অ্যাক্যাডেমি আওয়ার্ড ফর বেস্ট ফরেন ল্যাঙ্গুয়েজ এর জন্য মনোনীত করা হয়েছিল। এই সিনেমাটি ইতিহাসকে আরো একবার অন্যভাবে সকলের সামনে তুলে ধরে। ইংরেজদের অত্যাচারের হাত থেকে কিভাবে রক্ষা পেয়েছিল এক দল গ্রামবাসী শুধুমাত্র ক্রিকেট নামক একটি খেলার হাত ধরে তা দেখানো হয়েছিল এই সিনেমার মাধ্যমে।
দঙ্গল: ২০১৬ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত এই সিনেমাটিতে কুস্তিগীর মহাবীর সিংহ ফগতের চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন আমির খান। এই সিনেমাতে অভিনয় করার জন্য নিজের ওজন বাড়াতে হয়েছিল আমির খানকে। অসাধারণ এই সিনেমাটি গত বছর পর্যন্ত আয়ের দিক থেকে দ্বিতীয় স্থানে ছিল।